গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩-তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগামী শুক্রবার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শোভাবর্ধণ এবং জাতীয় শিশু সমাবেশ ও তিন দিনব্যাপী বই মেলা আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে প্রশাসন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিবিঘ্ন করতে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত শতাধিক তোরণ, ডিজিটাল পোস্টার ও ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ও পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছাবেন। এরপর প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন। এসময় তিন বাহিনী কর্তৃক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি ঢাকায় ফিরে যাবেন। রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানানোর পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন। সকাল ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার প্রদান, অস্বচ্ছল মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক অনুদান বিতরণ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শিশু শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শিশু শিল্পীদের সঙ্গে ফটোসেশন অংশ নেবেন। দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বই মেলার উদ্বোধন ও স্টল পরিদর্শন করবেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শেষে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সার্থক করার জন্যে প্রশাসনের পাশাপাশি টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এখানে থাকবেন নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও কাজ করে যাবো।’
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, ‘১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩-তম জন্মবার্ষিকী। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রথমে টুঙ্গিপাড়ায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরে রাষ্ট্রপতি আসবেন। রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জাবাবেন। পরে রাষ্ট্রপতি প্রথমে জাতির পিতার সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা জানানোর পরপরই প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি চলে যাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী দুপুরের খাবার খেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।’
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ সফর নিয়ে সব স্তরের মানুষদের মাঝে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরী হয়েছে। সারা গোপালগঞ্জ রঙিন সাজে সেজেছে। ব্যানার-ফেস্টুনে ভরে গেছে প্রতিটি রাস্তাঘাট।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান বলেন, “রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ‘শুভ শুভ দিন, বঙ্গবন্ধু জন্মদিন’ খচিত তোরণ ও প্লাকার্ডে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত করে বিভিন্ন সড়কে টাঙানো হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করতে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সব ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘১৭ মার্চ জাতির পিতার ১০৩-তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সফর উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতির দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। আমরা আশা করছি সব কিছু সফলভাবে আয়োজন করতে পারবো।’